নিজস্ব প্রতিবেদক ::
আগামীকাল ১৮ মার্চ চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়ার কথা জানালেও ভোটারদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। তারা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবী জানিয়েছেন।
সারাদেশের মধ্যে ২ধাপের হলেও কক্সবাজার জেলায় ১ম ধাপে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে চকরিয়ায়। তফসিল অনুযায়ী আগামীকাল ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ১৮ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে চকরিয়া গঠিত। এখানে ভোটার রয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৪৪১জন ভোটার রয়েছে। ভোটগ্রহণের জন্য কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৯টি।
চকরিয়ায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছে নৌকা প্রতীকে গিয়াস উদ্দিন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীকে ফজলুল করিম সাঈদী। দুজনই আওয়ামী লীগের ঘরের প্রার্থী। চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ফজলুল করিম সাঈদীর মার্কা আনারস, সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিনের দলীয় মার্কা নেৌকা হলেও তার জনপ্রিয়তা নিয়ে জনমনে বিভিন্ন প্রশ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে নেৌকা মার্কা প্রার্থীর চাইতে বিদ্রোহী প্রার্থীর আনারস মার্কার জনপ্রিয়তা শীর্ষে রয়েছে বলে জানিয়েছেন চকরিয়ার সচেতন ভোটাররা।
ইতোমধ্যে এক প্রার্থী আরেক প্রার্থীকে উদ্দেশে নানা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে। আবার আশঙ্কার কথাও বলছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী ফজলুল করিম সাঈদী বলছেন, এখন আর ভোট ডাকাতির সুযোগ দেবে না জনগণ। তাই জনগণের ভোট ছাড়া নির্বাচিত হওয়ার স্বপ্ন দেখে লাভ নেই। যদি কেন্দ্রে প্রভাব বিস্তার করে ভোট কেটে নেওয়ার চেষ্টা হয় তাহলে রক্তপাত হবে। জনগণ বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেবে না। তারা এবার ভোট দিতে চায়। প্রশাসনকে কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবী জানান তিনি।
অন্যদিকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন বলছেন, নৌকা প্রতীক জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করেছে। উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে তারা নৌকা প্রতীককে ভালবাসে। তাই মানুষ উৎসবমুখর পরিবেশে নৌকায় ভোট দেবেন।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জনগণের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে উৎসবমুখর ভোটের পরিবেশ দেখতে চায় তারা।
ডুলাহাজার ইউনিয়নের জুমছড়ি এলাকার বাসিন্দা আনসার হোসেন বলেন, আমরা নিজেদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিতে চায়। এ জন্য দরকার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ। প্রশাসনের প্রতি আকুল আবেদন থাকবে জনগণ ভোট দিতে যাওয়ার মত পরিবেশ যেন বজায় থাকে।
ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা নুরুল হক বলেন, আমাদের কাছে ভোট উৎসবের চেয়ে উদ্বেগের বেশি। সাধারণ ভোটারেরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিতে পারা নিয়ে চরম উৎকণ্ঠায় আছে। বিভিন্ন প্রার্থীর লোকজন ‘উড়ু’ হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে।
এদিকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ করার জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন। প্রশাসন পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোন অবস্থাতেই বিশৃঙ্খলা করতে দেবে না। বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে সব ধরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। একটি অবাধ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণের জন্য ১৮ ইউনিয়নে ১৮ জন এবং পৌরসভায় ২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবে। দায়িত্বপালন করবেন ১ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। মোতায়েন থাকবে বিজিবি ৬ প্লাটুন, পুলিশ ১ হাজার ১০০ জন ও ২ প্লাটুন র্যাব। প্রতিকেন্দ্রে ১২ জন করে আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, আজ (রোববার) স্ব-স্ব কেন্দ্রে ব্যালেট পেপারসহ নির্বাচনীয় সরঞ্জাম পৌছে যাবে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট উপহার দেয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন বদ্ধ পরিকর।
পাঠকের মতামত: